পরিবার দাবি যৌতুকের জন্য হত্যা: রাঙ্গুনিয়ায় পুকুর থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

ttttttttttt

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ

print news

জগলুল হুদা,রাঙ্গুনিয়া: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পুকুর থেকে রিপু আক্তার (২২) নামে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর একটার দিকে চন্দ্রঘোনা আধুরপাড়া গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ির পুকুর থেকে দুপুর ১টার দিকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে। নিহত রিপু আক্তার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড জান মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের মেয়ে। গেল ছয় মাস আগে চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড কদমতলী গ্রামের মোহাম্মদ জামালের ছেলে মোহাম্মদ ইমরানের সাথে তার বিয়ে হয়। এদিকে অজ্ঞাত অবস্থায় উদ্ধারের পর ফেসবুকে ছবি দেখে স্বজনরা নিহতের লাশ শনাক্ত করেন।নিহত গৃহবধূর বড় ভাই নেজামুল হক টিপু বলেন, “ফেসবুকে ছবিতে দেখতে পায় আমার বোনের ছবি। দ্রুত হাসপাতালে এসে দেখি আমার বোনের লাশ। চলতি বছরের ১৮ মে আমার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে আমার বোনকে শারীরিক মানসিক নির্যাতন চালাতো। যৌতুকের দাবিতেই তারা আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এই ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।” নিহত রিপু আক্তারের মা মোরশেদা বেগমও একই অভিযোগ জানিয়ে বলেন, শাশুড়ি ফার্নিচারের জন্য প্রায়শই নানাভাবে নির্যাতন করতো। সে অসুস্থ, চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কিছুদিনের জন্য বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও তারা দেয়নি। পরে আমি প্রায় এক সপ্তাহ মেয়ের সাথে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে আজ (শনিবার) সকাল ৮টার দিকে ঘরে আসি। এসেই দুপুরের দিকে শুনি তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে দুপুরের দিকে শুনি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়েছে। আমার মেয়ে এভাবে মরতে পারে না, তারাই পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে৷  নিহত রিপু আক্তারের শ্বশুর মোহাম্মদ জামাল বলেন, “আমার মেয়ে অসুস্থ থাকায় সকালে আমি আর আমার স্ত্রী মেয়ের শ্বশুর বাড়ি যায়। ঘরে আমার পুত্রবধূ একা ছিলো। এসে শুনতে পাই তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে শুনতে পাই আধুরপাড়া পুকুরে তার লাশ পাওয়া গেছে। তাকে আমরা নির্যাতন করতাম, বিষয়টা সঠিক নয়।” চন্দ্রঘোনা কদমতলীর স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাসান সিকদার বলেন, “তারা দুজন প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে বিয়ে করেছিলো। অন্তঃসত্ত্বা এই নারীর ইদানিং মানসিক নানা সমস্যায় ভুগছিলো। এজন্য ডাক্তারি চিকিৎসার পাশাপাশি ধর্মীয় চিকিৎসাও করছিলো শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আজ শ্বশুর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সে আধুরপাড়া গ্রামের মোল্লাপাড়া সালেহ আহমদ ফকির মাজার এলাকায় যায়। সেখানে স্থানীয়দের কাছ থেকে তার ফুফুর বাড়ির সন্ধানও করে। সম্ভবত সেখানে তার ফুফুর বাড়িতেই যেতে চেয়েছিলো। হয়ত তার শরীর খারাপ হলে মাজারের পুকুরে নামলে দুর্ঘটনাবশত সে পানিতে পরে গেলে আর ওঠতে পারেনি। ঘটনার পর থানার ওসি ও এসপি মহোদয় এসে তার চিকিৎসাপত্র দেখে গেছেন।” রাঙ্গুনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার মজুমদার বলেন, “খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে গিয়ে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছি। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ