ইচ্ছেমতো বিদ্যালয়ে আসেন প্রধান শিক্ষিকা: মানেন না কোন নিয়মনীতি !

received 1402401537622229 scaled

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ

print news

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফটিকছড়ি: ফটিকছড়ি উপজেলার বাগানবাজার ইউনিয়নের চিকনেরখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুচিত্রা রানী দাশের বিরুদ্ধে স্লিপ ফান্ডের টাকা নয়-ছয়, স্কুল আঙ্গিনা ভাড়া দিয়ে কৃষকদের ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার, ক্লাস চলাকালীন সময়ে বিশ্রাম, স্বেচ্ছাচারিতারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও শিক্ষার সুষ্ঠু কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের বারান্দায় বসে সবজি বাঁধার কাজ করছেন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক। পাশের রুমে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। প্রধান শিক্ষক অফিস কক্ষে নেই, অন্য দুই শিক্ষক এক সাথে নিচ্ছেন তিনটি ক্লাস। ক্লাস চলাকালে বিদ্যালয়ের বারান্দায় সবজি আটি বাঁধার কারণ জানতে চাইলে কৃষকেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এখানে সবজি বাঁধছি। স্থানীয়রা বলেছেন, এই কাজ প্রতিনিয়ত হয়। কোন বাঁধা আসেনা বলে কৃষকরা নিয়মিত এসব করেন। জানা যায়, উপজেলার বাগানবাজার ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া বিদ্যালয়টি দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে হওয়ায় এমনিতেই শিক্ষার সুযোগ সীমিত। বিদ্যালয়ের বারান্দা কৃষিকাজে ব্যবহৃত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারানোর পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার অনুকুল পরিবেশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, এ ধরনের কর্মকান্ড বারবার বন্ধ করার অনুরোধ করা হলেও প্রধান শিক্ষক এসব বিষয় এড়িয়ে যান। এতে শিক্ষার্থীরা অমনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি আমরাও থাকি দু:শ্চিন্তায়। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের দ্রুত ভাবা দরকার।স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুল হালিম বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতি না মেনে যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে বিদ্যালয় চালান। আমরা তাকে অনেকবার বলেছি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাতে। কিন্তু তিনি বিষয়টি আমলে নেননি। যদি বিদ্যালয়ের স্বার্থ বা ভাড়া না নিয়ে থাকেন, তবে অন্যের কাজে বিদ্যালয়ের জায়গা ব্যবহার হবে কেন? বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিরি সাবেক সভাপতি ওসমান গণি জানান, আমি থাকা অবস্থায়  বহুবার বলেছি এসব সমস্যার কথা। প্রধান শিক্ষক কারো কথা শোনেননি। ইচ্ছামতো স্কুলে আসেন এবং আগেভাগে চলে যান। প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব শীলতার অভাব রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুচিত্রা রানী দাশ বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, স্কুলে বিশ্রাম নেওয়ার প্রশ্নই আসেনা। কৃষকদের বারবার বলা সত্বেও তারা কথা শোনেন না । তবে এটি সত্য যে, আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাইনি। আর স্লিপ ফান্ডের যে রশিদ সে গুলো যে দোকানের কাজ সে দোকানে রশিদ না থাকায় অন্য দোকান থেকে নিয়েছি। নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকেন বলে দাবি করেন তিনি। এবিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ই্উএই) মো. হাসান মুরাদ চৌধুরীর মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করা হয়, কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি খুবই মারাত্মক। এ বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’

 

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ