নিজস্ব প্রতিবেদক, রাউজান : চট্টগ্রামের রাউজানে শেষ রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়া গ্রামে হাজী সোলে মানের বাড়িতে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রায় এক যুগেরও অধিক সময় পর শেখপাড়া গ্রামে ঘটে যাওয়া এই ডাকাতির ঘটনায় হাজী সোলেমান ও তার ভাই মৃত আবুল কালামের পরিবারের নারী সদস্যদের মারধর করে দুই পরিবার হতে ৬ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ একলাখ ৪টাকা, ২টি স্মার্ট ফোন ও একটি বাটন মোবাইল লুট করে নিয়ে যায় ডাকাত দল। ২৩মে (শুক্রবার) বিকালে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়ার নির্দেশে চুয়েট ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি ডাকাতির বিষয়ে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য জাহেদুল ইসলাম ইমরুল বলেন,বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিঁড়ি ঘরের চালের টিন কেটে ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে শয়ন কক্ষের দরজা ভেঙে আমার বাবা ও চাচীকে হাত-পা বেঁধে ফেলে। নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারের জন্য আমার স্ত্রী ও আমার চাচাত বোনকে আঘাত করে। আমার ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তারা আমার স্ত্রী ও চাচীর ৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, আমাদের নগদ ৪ হাজার টাকা ও আমার চাচীর নগদ প্রায় ১ লাখ টাকা এবং ৩টি মোবাইল নিয়ে যায়। আমি শহরে জব করি। গতকাল ছিল আমার নাইট শিফট। পরিবারে আমার বৃদ্ধ বাবা ছাড়া আর কোন পুরুষ নেই। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তবুও মামলার প্রস্তুতি নিয়েছি। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য আয়শা বেগম বলেন, ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্য ঘরে ঢুকে আমাকে চাবি দিতে বলে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি কয়েকজন যুবক। তারা আমাকে চুপ থাকতে বলেন। আমাকে বলেন, আমরা মেহমান এসেছি। টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার সব দিয়ে দাও। আমরা ইনফরমেশন নিয়ে এসেছি। তখন তারা আমার হাত-পা বেঁধে ফেলে। আমার মেয়েকেও মারধর করে। তারা সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। কিছু ডাকাত। আমার ভাসুরের ঘরে ঢুকে তাদেরও মারধর করে। তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী নেই। আমার ছেলেও নেই। আমি ও আমার মেয়েদের সংসার খরচের শেষ সম্বল যা ছিল তা নিয়ে গেছে। স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা শিহাব উদ্দিন বলেন, আমি মসজিদে আজান দিতে এসে দেখি বেশ কিছু তরুণ-যুবক দৌড়ে পালাচ্ছে। আমি টর্চ লাইট মারলে তার বিলে নেমে দক্ষিণে গুচ্ছ গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। পার্শ্ববর্তী গরুর খামারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শুক্রবার ভোর ৪টা ২৩ মিনিটে ১১-১২ জনের একটি তরুণ-যুবকের দল দেশীয় অস্ত্র -বস্তা ও নানা সরঞ্জাম নিয়ে ডাকাতি করে বের হয়ে দৌড়ে দেওয়ানপুর সড়ক দিকে পালাচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে দেখতে আসা মো. সোলেমানের চাচাত ভাই আব্দুল শুক্কুর বলেন, দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে শেখপাড়া গ্রামে ডাকাতির ঘটনা ঘটে নি। এখন নতুনভাবে আবার ডাকাতি শুরু হল। ডাকাতদের আটক করতে দ্রুত প্রদক্ষেপ গ্রহনের জন্য আমি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার এখনও কোন অভিযোগ করে নি। তবুও ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন আলামত ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। লুট করে নিয়ে যাওয়া মোবাইলটা ২৩ মে ( শুক্রবার) আড়াইটা পর্যন্ত চালু ছিল। আমরা কয়েকটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছি। রাতে ব্যাপকভাবে অভিযান পরিচালনা করব।
চট্টলা প্রতিদিন, মোবাইল : ০১৮১৭ - ৭৬৬৭৭১ - ইমেইল : [email protected]
© All rights reserved © 2023 Chattala Protidin