রাউজানে আবারো যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা পৃথক ঘটনায় সিএনজি চালক গুলিবিদ্ধ

IMG 20250422 232837

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ

print news

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাউজান : চট্টগ্রামের রাউজানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মুহাম্মদ ইব্রাহিম নামে আরও এক যুবদলকর্মী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ২২ এপ্রিল  মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় রাউজান সদর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের গাজী পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম ওই এলাকার মুহাম্মদ আলমের ছেলে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুটি অটো রিকশায় করে ১০ থেকে ১২ জনের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাঁর মাথায় ও বুকে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ সময় তাঁর বাবা মুহাম্মদ আলম ও চাচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিমকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। গায়ে গুলি না লাগলেও পালাতে গিয়ে পড়ে তাঁরা আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ জানায়। এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গরিব উল্লাহপাড়া গ্রামের ভান্ডারি কলোনির একটি বাসায় ভাত খাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা যুবদলকর্মী মুহাম্মদ মানিক আবদুল্লাহকে (৩৬) গুলি করে হত্যা করে। নিহত মানিক আবদুল্লাহও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। দুই দিনের ব্যবধানের পর পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। যুবদল কর্মী ইব্রাহিমের হত্যার খবর বাড়িতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। মঙ্গলবার  দুপুরে চট্টগ্রামের রাউজানের আদর্শ গুচ্ছগ্রামে যুবদল কর্মী ইব্রাহিমের হত্যার খবর বাড়িতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুরে মুহাম্মদ ইব্রাহিম তাঁর বাড়ির দেড় কিলোমিটার দূরে একটি দোকানের সামনে বসেছিলেন। এ সময় হঠাৎ একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তিনটি অটোরিকশায় এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। এ সময় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মাথার একদিকে গুলি ঢুকে অন্য দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে সন্ত্রাসীরা এলাকা ত্যাগ করে। নিহত ব্যক্তির চাচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম বলেন, তাঁর ভাতিজাকে তাঁর সামনেই গুলি করে সন্ত্রাসীরা। সময় এগিয়ে গেলে তাঁকে লক্ষ্য করেও তিন চারটি গুলি ছোড়ে। তিনি এবং তাঁর বড় ভাই কোনো রকমে পালিয়ে বেঁচে গেছেন। তাঁর ভাতিজা যুবদল করলেও কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। নিহতের মা খালেদা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে ফোনে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলে ইট, বালু ও ইটের ব্যবসা করে। কখনো আমার ছেলে কোনো অপকর্ম করেনি, অন্যায় করেনি। আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। নিহতের বাবা মোহাম্মদ আলম বলেন, আমার ছেলেকে হত্যা করে কলিজা বের করে ফেলেছে। আমার ছেলের লাশ আমি কিভাবে কাধে তুলবো বাবা। আমার ছেলেতো এমন কোনো অপরাধ করেনি তাকে গুলি করে হত্যা করতে হবে। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, মুহাম্মদ রায়হান নামের একজন সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।উল্লেখ্য, রাউজানে গত ৫ আগস্টের পর সহিংসতায় মোট ১২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৮টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার।

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ