ভূজপুরে সক্রিয় জালিয়াত চক্র:তৈরি হলো ধর্ষণ মামলার আসামীর ভুয়া জন্ম সনদ

IMG 20250504 233809

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ

print news

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফটিকছড়ি : ফটিকছড়ি উপজেলার বাগানবাজারে ধর্ষণ মামলায় আটককৃত এক যুবককে মামলা থেকে বাঁচাতে জন্ম নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এসব জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়েছে বাগানবাজার ইউপি সচিব বখতিয়ার উদ্দিনসহ একটি জালিয়াত চক্র। অতীতে জালিয়ার চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও থেমে নেই তাদের দৌরাত্ম। গত ১৯ এপ্রিল ৫ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে কাউসার হোসেন (১৯) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। আটককৃত যুবক কাউসার হোসেন একই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড হলুদিয়া এলাকার মৃত মোখলেছুর রহমানের পুত্র।আটক হওয়ার পর জালিয়াতি করে বানানো হয় একই ব্যক্তির দু’টি জন্মনিবন্ধন সনদ। নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে করা হয় জামিন আবেদনও। সেই দু’টি জন্মনিবন্ধন সনদসহ কয়েকটি নথিপত্র আসে প্রতিবেদকের হাতে। এসব নথি ঘেঁটে দেখা যায়, আটককৃত কাউসার হোসেনের মুলত জন্ম ২০০৫ সালের ১৫ অক্টোবর। ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদের মাধ্যমে তাকে বানানো হয় ১৬ বছরের কিশোর। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টির পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। নথিপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কাউসার হোসেনের পিতা মুখলেসুর রহমান মাতা শাহার বানু মুলে ১৫ অক্টোবর ২০০৫ জম্মসন দেখিয়ে ২০০৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাগানবাজার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জম্মনিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করে সে। সে সনদ অনুযায়ী তার বয়স হয় ১৯ বছর ৬ মাস। আটক হওয়ার পর কারচুপির আশ্রয় নিয়ে চলতি বছরের গেল মাসের ২৪ তারিখ পিতারস্থলে মো. মোকলেছ মিয়া ও শার বানু বেগমকে মাতা দেখিয়ে আরেকটি জম্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে তার পরিবার। যে সনদটি তৈরি করা হয় বিপুল অর্থ ও জালিয়াতির মাধ্যমে। অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, নতুন ভুয়া জম্মনিবন্ধন সনদটি তৈরি করতে স্থানীয় ইউপি সচিবসহ একটি চক্র এ কাজ করে। যেখানে বিনিময় হয় বিপুল অর্থের। যার সত্যতা মিলে স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন ও আবুল কাসেমের কথায়। স্থানীয় দোকানি রুবেল কম্পিউটারস থেকে নতুন এ সনদটি আবেদন করে ধর্ষণ মামলায় আটককৃত কাউসার হোসেনের ভাই আলামিন।  পরবর্তীতে তথ্যগোপন করে স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে জম্মসনদটি তৈরি করে ইউপি সচিব বখতিয়ার উদ্দিন। ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, ‘তথ্যগোপন করে তার ভাই আলামিন আমার কাছ থেকে আবেদন ফরমে স্বাক্ষর নেয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদের নথিপত্র দেখে জানতে পারি তার অপর একটি জম্মসনদ রয়েছে। বিষয়টিতে দুঃখিত হয়েছি।’এ ব্যাপারে মো. আলামিনকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।’বাগানবাজার ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) মো. বখতিয়ার উদ্দিন দু’টি জম্মসনদ তৈরির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘ প্রতিদিনই এরকম অনেক ডকুমেন্টস পরিষদে আসে। এতো কিছু যাচাই-বাচাই করার সময় কই?। অফিসের নির্ধারিত ফি নিয়ে তার কাগজটি করে দিয়েছি। ‘বাগানবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আলি নুর মিয়াজি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার জানা নেই। বিষয়টি জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

 

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ