
নিজস্ব প্রতিবেদক, ফটিকছড়ি: ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবু জাফর মাহমুদ স্বপদে ফেরার গুঞ্জন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ক্ষিপ্ত ইউনিয়নবাসী তাঁকে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন। গত শুক্রবার, শনিবার ও রোববার তাঁকে শক্তহাতে প্রতিহতের এ চরম ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় ইউনিয়নবাসীদের সর্বদা সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে তার বিরুদ্ধে নানা স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান প্রধান সড়কে মানববন্ধনও করেন। বর্তমানে ইউনিয়নজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ প্রশাসনও সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন বলে জানাগেছে। নারায়ণহাট বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহাদাত বলেন, ‘কিছুতেই দোসর এই চেয়ারম্যানকে দপ্তরে বসতে দেওয়া হবে না। তাকে চরম মূল্যে প্রতিহত করা হবে। কেননা তিনি আ.লীগের দোসর এবং দখলবাজ ও চাঁদাবাজ হিসেবে চিহ্নিত। এখানে তার কোনো ঠাঁই নেই।’স্থানীয় বাসিন্দা জীপ চালক আমির খান বলেন, ‘এই পরিষদকে সংস্কার করতে হবে। এই অথর্ব চাঁদাবাজ চেয়ারম্যানের সকল ষড়যন্ত্রকে রুখতে হবে শক্ত হাতে। এটা আমাদের করতেই হবে। তাকে আর কেউ চায় না।’ সমাজকর্মী মো. আনসুর আলী বলেন, ‘আমরা কাউকে ভয় পাই না। আমরা পরিষদ পাহারা দেব। তিনি এসে কী করে দেখব। যাদেরকে নিয়ে আসার চেষ্টা করবে তাদেরকেই প্রতিহত করবো। প্রয়োজনে পরিষদে তালা দেব।’স্থানীয় গৃহবধূ কমলা খাতুন বলেন, ‘বিগত সময়ে নানাভাবে বিচার বাণিজ্য, জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা দিয়ে বাসিন্দাদের হয়রানী করেছেন তিনি। এমন কোনো ঘৃনিত কাজ নেই যে তিনি করেনি। আমরা প্রয়োজনে জীবন দেব, রক্তপাত হবে, তবুও তিনি স্বপদে আসতে পারবেন না।’পরিষদের এক ইউপি সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘তার স্থান আর নারায়ণহাট ইউপিতে হবে না। তিনি চেছ্রা প্রকৃতির প্রতিনিধি। তিনি তাকে অতীত কৃতকর্মের জন্য এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবীও জানান।’জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মো. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, ‘জনগনের অর্পিত দায়িত্ব পালনে বাধা আসলে শৃংখলা বাহিনী দেখবে। রাষ্ট্র আমাকে নিরাপত্তা দেবে। আমি আ.লীগের চেয়ারম্যান নই, আমি স্বতন্ত্রের। ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় আমি বার বার চেয়ারম্যান হয়েছি।’ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে শৃংখলা রক্ষায় যাবতীয় প্রস্তুতি আমাদের আছে। তাছাড়া বিষয়টি ইউএনও মহোদয় অবগত। তার নির্দেশনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘জেলা প্রশাসক (ডিসি) তাঁকে নিজ দায়িত্বে পরিষদ পরিচালনার লিখিত প্রশাসনিক ক্ষমতা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে বিষয়টি ইতিবাচক হয়।’