সুমন পল্লব, হাটহাজারী : অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ১৪ মে বুধবার বিকালে তাঁর পৈত্রিক নিবাস ১৪নং শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে এসে প্রথমে তাঁর দাদা দাদীর কবর জিয়ারত করছেন। তিনি বিকাল পাঁচটায় গ্রামের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে দাদা দাদী ও স্বজনদের কবর জিয়ারত করেন। পরে সংলগ্ন অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে চার মিনিট চট্টগ্রামের ভাষায় সবাই সালাম দিয়ে সকলে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করে। এরপর ছোট কালের স্মৃতি চারন করেন। এই সময় তিনি বলেন ৩য় শ্রেনী পর্যন্ত মাজইন্যা স্কুল লেখা পড়া করেন। এরপর তাঁর বাবা হাজী দুলা মিয়া সওদাগর তাঁকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে গিয়ে সেখানে স্কুলে ভর্তি করে দেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে চট্টগ্রামের ভাষায় বলেন নজু মিয়ারহাট শর হই গিয়ে, শর বিলাত হই গিয়ে। আসলে কথা ঠিক বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভবিষ্যতে দেশের আরো উন্নতি হবে বলে মন্তব্য করেন। এই সময় তিনি ছোট কালের দুইটি গ্রাম্য ছড়া বলেন " আবদুর রশিদ টেন্ডলের ঠাট, নজু মিয়ার হাট", "জুনু মিয়ার জালার বারি ফোরক মিয়ার গরুর গাড়ি"। চার মিনিট কাল বক্তব্যে তিনি তাঁর ছোট কালের স্মৃতি চারন করেন। এই সময় উপস্থিত লোকজন তাঁকে দেশের স্বার্থে পাঁচ বছর দেশ পরিচালনার দাবী তোলেন। সময় ও নানা বাধ্যবাধকতার কারনে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বে ও বাড়িতে আসতে না পারার কথা ও উল্লেখ করে। প্রধান উপদেষ্টা গ্রামের বাড়িতে আগমনকে কেন্দ্র করে সেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্হা গ্রহন করেছেন প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাড়ির চতুর্দিকে নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা ছিল। এলাকার সন্তান নিজ বাড়িতে আগমনের খবর পেয়ে স্হানীয়দের মধ্যে খুশি আমেজ ছিল চোখ পড়ার মত। স্হানীয়দের প্রত্যশা ছিল গ্রামের সকালে তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা নিরাপত্তা জনিত কারনে সকলে সেখানে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। নিদিষ্ট কিন্তু সংখ্যাক লোকজনকের নিরাপত্তা কার্ড প্রদান করা হলে ও পরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক লোকজন গ্রামের সন্তানকে এক নজর দেখতে অনুষ্ঠান মঞ্চের সম্মূখে ছুটে যান। প্রধান উপদেষ্টা সাথে সফর সঙ্গী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তারাই উপস্থিত ছিলেন। প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে থেকে বাথুয়া গ্রামের তাঁর পৈত্রিক বাড়ি, হাজী এম নজুমিয়া সওদাগরের বাড়িতে সংস্কার ধোঁয়া মোছা, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও রংচুন করার কাজ শুরু হয় বুধবার সকাল পর্যন্ত চলে কাজ। প্রফেসর ড,মুহাম্মদ ইউনূস শান্তির জন্য নোবেল পাওয়ার পর পর একবার গ্রামের বাড়িতে এসেছিল। সেই সময় এলাকাবাসী তাঁকে সংবর্ধনা প্রদান করেছিল। দীর্ঘ সময় পর অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত হওয়ার পর আজ প্রথম তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে পাঁচটায় বাড়িতে উপস্থিত হয়ে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত তিনি বাড়িতে ছিল। নিরাপত্তার জন্য বেলা চারটার পূর্ব থেকে কাপ্তাই মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে স্হানীয়রা গনমাধ্যমকে জানান। প্রধান উপদেষ্টার বাড়ির ৫০ গজ দুরে নির্মাণ করা হয় মঞ্চ। মঞ্চ সংলগ্ন এলাকায় তাঁর দাদা দাদীর কবর।
চট্টলা প্রতিদিন, মোবাইল : ০১৮১৭ - ৭৬৬৭৭১ - ইমেইল : [email protected]
© All rights reserved © 2023 Chattala Protidin