
এম কামাল উদ্দিন, রাউজান : এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে চলছে কার্পজাতীয় মা মাছের প্রজনন মৌসুম। প্রজননের মৌসুমে ১২ দিনের ব্যবধানে দুটো মৃত মা মাছ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। ১৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে নদীর রাউজান অংশের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকায় জোয়ারের স্রোতে মৃত মৃগেল মা মাছ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। তৎক্ষনাৎ রাউজান-হাটহাজারী হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রোসাঙ্গীর আলম, ডিম সংগ্রহকারী আনোয়ার হোসেন ও মোহাম্মদ বখতেয়ার নদীতে ভাসমান অবস্থায় মৃত মৃগেল মাছটি উদ্ধার করে নদীর তীরে নিয়ে আসেন। এটির ওজন ৫ কেজি ১০০ গ্রাম। দৈর্ঘ্যে ২ ফুট ৬ ইঞ্চি। খবর পেয়ে হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন।মাছটির মাছের মাথার নিছে থেতলানো ছিল। পরে প্রাথমিক তদন্ত শেষে মৃত মৃগেল মা মাছটি স্থানীয় স্বেচ্ছা সেবীদের সহায়তায় মাটিচাপা দেওয়া হয়। উল্লেখ্য,গত ৪ মে রবিবার বেলা ৩টার দিকে হাটহাজারি উপজেলার মাদার্শার মুন্সিমাঝির ঘাটের পাশে মৃত কাতলা মাছ উদ্ধার করেন স্থানীয় রোসাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ আনেয়ার। মাছের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। হালদা গবেষক ও চটগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে হালদা নদীতে চলছে কার্পজাতীয় মা মাছের প্রজনন মৌসুম। ইতোমধ্যে তিনটি জোঁ অতিক্রম হলেও বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে মা মাছ এখনো ডিম ছাড়েনি। প্রজননের এই ভরা মৌসুমে আজ হালদা নদীর রাউজান অংশের আজিমার ঘাট থেকে একটি ৫ কেজি ১০০ গ্রাম ওজনের মৃত মৃগেল মা মাছ উদ্ধার করা হয়। এই আগেও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ৫ কেজি ওজনের একটি মৃত কাতলা মা মাছ উদ্ধার করা হয়েছিলো। প্রজননের এই সময়ে মা মাছের মৃত্যূ খুবই উদ্দেগ জনক। কার্পজাতীয় মা মাছ যেন নিরাপদে ডিম ছাড়তে পারে তাই অসাধু মৎস্যশিকারীদের থেকে মা মাছ রক্ষা, ইন্জিনচালিত নৌযান বন্ধ ও দূষণের থেকে হালদা নদীর জলজ বাস্তুতন্ত্রকে স্বাভাবিক রাখতে হালদা ও তার শাখা খাল গুলোতে প্রশাসনিক ভাবে নিয়মিত অভিযান ও স্থানীয়ভাবে নজরদারী বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবেশ অনুকুলে থাকলে অর্থাৎ বজ্রপাতসহ পর্যাপ্ত বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢল নেমে আসলে চলতি মাসের অমাবস্যার জোঁ’তে (২৫ মে- ২৯ মে) হালদা নদীতে মেজর কার্পজাতীয় মা মাছের ডিম ছাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। রাউজান সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, মাছটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল, ধারনা করা হচ্ছে মাছটিকে প্রচন্ড ভাবে আঘাত পেয়েছে। পরে মৃত মা মাছটি সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে হালদা নদীর পাড়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।