নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গুনিয়া : রাঙ্গুনিয়ায় ব্যাংকে যাওয়ার পথে সিএনজি চালক ও যাত্রী বেশে দুজন প্রতারক অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে ফরিদা বেগম (৫৫) নামে এক নারীর স্বর্ণের কানের দুল ও হাতের ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।প্রতারণার ফাঁদে পড়া ফরিদা বেগম উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সাহেবনগর এলাকার মৃত বাচা মিয়ার স্ত্রী। ভুক্তভোগী নারী জানান, তিনি সকাল ১০টার দিকে রাণীরহাট বাজারে ব্যাংকে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সাহেবনগর ব্রীজের গোড়া এলাকা থেকে সিএনজি অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করলে একটি গাড়ি এসে তাকে উঠিয়ে নেয়। গাড়িতে স্বাস্থ্যবান একজন চালক এবং পেছনের আসনে আরও একজন যাত্রীবেশে ব্যক্তি ছিলো। কিছুদূর যাওয়ার পর গাড়ির চালক পেছনে ফিরে কোথায় যাবে জিজ্ঞেস করে। তিনি রাণীরহাট বাজারে ঔষধ কেনার জন্য যাচ্ছেন বলে জানান। এসময় অটোরিকশার পেছনে বসা ব্যক্তি পাশ থেকে নিজেকে ইসলামপুর সিরাজ চেয়ারম্যানের ভাই বলে পরিচয় দেন। তিনি চেয়ারম্যান কিছু দেয় কিনা জিজ্ঞেস করে৷ স্বামী নেই বলার পর বলে বিধবা ভাতা পায় কিনা। একপর্যায়ে তাকে ভাতা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে বোরকার পর্দা তুলতে বলে। এসময় মুখের সামনে মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার ভান করে পাশে থাকা ওই ব্যক্তি। এরপর ওই মহিলা নিজের হুশ হারিয়ে ফেলেন। প্রতারকরা তাকে রাণীরহাট না নিয়ে উল্টোদিকে ইসলামপুরের মগাছড়ি মইন্নের টেক নিয়ে যায়। তারপর কানের দুল দিতে বললে তিনি নিজ হাতেই তা খুলে দেন। যা তিন আনা ওজনের হবে। এছাড়া হাতব্যাগটি চেকবইসহ খুঁজে তারা নিয়ে ফেলে। মহিলাও তাদের কথামতো সব দিয়ে দিতে থাকে। একপর্যায়ে ওই মহিলার ব্যাগ থেকে ২০ টাকা বের করে তার হাতে দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা থেকে নামিয়ে দিয়ে ক্ষেতের ধার ধরে হেটে চলে যেতে বলেন। তিনিও তাদের কথামতো হাটতে থাকেন। কিছুদূর যাওয়ার পর তার হুশ ফিরে এলে পেছনে ফিরে দেখেন ওই গাড়িটা আর নেই।তিনি বলেন,"মোবাইলটি সামনে আনার পর আমি তাদের কথা অনুযায়ী কাজ করছিলাম। আমাকে কানের দুল খুলে দিতে বলছে, আমি খুলে দিচ্ছি, হাতের ব্যাগ দিতে বলছে, দিয়ে দিচ্ছি। এসব আমি শুনছি, মনেও আছে। কিন্তু আমি কেনো তাদের দিয়ে দিচ্ছি হুশ না ফেরা পর্যন্ত নিজেও বুঝিনি।" ভুক্তভোগী নারীর সন্তান সাইফুল ইসলাম বলেন, "আমার মায়ের হাত ব্যাগে একটি চেক বই ও কিছু টাকা ছিল। তাই মায়ের মুখে ঘটনা শুনে দ্রুত ব্যাংকে গিয়ে কেউ চেক নিয়ে এলে টাকা না দেয়ার জন্য অনুরোধ করি।" এই ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, "ইসলাম পুর মইন্নের টেক এলাকায় একটি সক্রিয় ছিনতাইকারী গ্রুপ আছে বলে স্থানীয়রা আমাকে জানিয়েছেন। আমি তাদের ব্যাপারে পুলিশকে জানিয়েছি।" এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, "এই ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে সম্ভবত চেতনানাশক কোন কিছু দিয়ে তাকে বশে নিয়ে গিয়েছিল। বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে।"
চট্টলা প্রতিদিন, মোবাইল : ০১৮১৭ - ৭৬৬৭৭১ - ইমেইল : [email protected]
© All rights reserved © 2023 Chattala Protidin