আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

image 643391 1675935800

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ

print news

এস.এম আলী সুমন: পারস্পরিক ভাবাবেগ প্রকাশ ও যোগা যোগের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ভাষা,আর প্রত্যেকের কাছে প্রিয় ভাষা হচ্ছে নিজের মাতৃভাষা। মহান ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষার মাস.. রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ের মাস। ভাষা আন্দোলন অর্থাৎ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগনের জন্য গর্বের একটি দিন। এটি সকল বাঙালির কাছে ঐতিহ্যময় মাতৃভাষা দিবস। ২১শে ফেব্রুয়ারি বা ৮ই ফাল্গুন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মাতৃভাষার প্রতি সকল জাতিরই আন্তরিক ও গভীর ভালোবাসা বিদ্যমান। আর এই ভালোবাসা অনকাংশে মায়ের প্রতি ভলোবাসার মতোই।বাঙালিরা মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠার জন্য যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিশ্বব্যাপি অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে।কেননা খুব কম জাতির মানুষ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আমাদের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সূচনা সেই বায়ান্ন সালেই শুরু হয়েছিলো। এই আন্দোলনই আমাদের জাতীয় ইতিহাসে প্রথম ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস হিসেবে চিহ্নিত। রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলাভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়োজনে আপোশহীন সংগ্রাম করেছেন আমাদের পূর্বসুরিরা। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাকে মাতৃভাষা করার দাবিতে পাকিস্তানি সরকারের ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে মিছিল বের করেছেন ছাত্ররা। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন ঢাকার রাজপথে। আত্মহুত্তি দিতে হলো ভাষা শহীদ বরকত, সালাম, রফিক, সফিক, জব্বার প্রমুখকে। রক্তাক্ত সেই স্মৃতিময় দিনটিকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপি পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন শুধু আমাদের মাতৃভাষার মর্যাদাকে সুপ্রতিষ্টিত করেনি বরং আন্তর্জাতিক ইতিহাসে গড়েছেন উপম দৃষ্টান্ত।একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় ১৯১টি দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। পৃথিবীর ১৯৩ টি দেশের প্রায় ৬ হাজার ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার এক মহান মর্যাদা রয়েছে।

ইউনেস্কোর স্বীকৃতিঃ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে ৭টি দেশের ১০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত সংগঠনে কানাডা প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালামও ছিলেন উদ্যোক্তা। তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো বাংলাদেশের বাঙালি জনগোষ্ঠীর ভাষার জন্য আত্মত্যাগকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষনা করেন এবং প্রতিবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০০ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি এ বিশেষ দিবসটিকে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে প্রথমবারের মতো ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করেন।

জাতিসংঘের স্বীকৃতিঃ ইউনেস্কোর পর জাতিসংঘও ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০০৮ সালের ৫ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এ স্বীকৃতি দেয়া হয়।পররাষ্ট্র দফতর ‘শান্তির জন্য সংস্কৃতি’ শীর্ষক একটি রেজুলেসনে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তুলে এটি ধরেন। ভারত, জাপান, সৌদি আরব, কাতার সহ বিশ্বের ১২৪টি দেশ এ রেজুলেশনটি সমর্থন করেন।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদের সৌর্য আমাদের অহংকার। যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আমাদের মাতৃভাষাকে সম্মান জানাবো এই প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।

এস.এম আলী সুমন,
কবি,লেখক,সংগঠক।

নিউজটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুনঃ